Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৮ নভেম্বর ২০২৩

স্কাউটিং এর প্রয়োজনীয়তা

স্কাউটিং-এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিশু, কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং সামাজিক গুণাবলী উন্নয়নের মাধ্যমে তাদেরকে পরিবার, সমাজ দেশ তথা বিশ্বের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। 


স্কাউট কার্যক্রমে কতগুলি বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়: 

  • হাতেকলমে কাজ শেখা
  • ছোট-দল পদ্ধতিতে কাজ করা
  • ব্যাজ পদ্ধতির মাধ্যমে কাজের স্বীকৃতি প্রদান
  • মুক্তাঙ্গনে কাজ সম্পদান
  • তিন আঙ্গুলে সালাম ও ডান হাত করমর্দন
  • স্কাউট পোশাক, স্কার্ফ ও ব্যাজ পরিধান এবং সর্বদা স্কাউট আইন ও প্রতিজ্ঞা মেনে চলা

স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা লর্ড ব্যাডেন পাওয়েলের নির্দেশিত নিয়ম অনুসারে অনুশীলন, প্রতিজ্ঞাপাঠ ও দীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে স্কাউট আন্দোলনে সদস্য হতে হয়। 

 

সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রোভার স্কাউট গ্রুপের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৩ সালের ২০ জুন। এর গ্রুপ রেজিষ্ট্রেশন নং: ৯/১৯৭৩। তৎকালিন সিলেট জেলার ১ম ও বাংলাদেশের ৯ম গ্রুপের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন জনাব মোহাম্মদ রিহান উদ্দিন, অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট যাকে রোভার স্কাউটিং-এ অবদানের জন্য বাংলাদেশ স্কাউটস  থেকে ’ন্যাশনাল সার্টিফিকেট এওয়ার্ড ’ প্রদান করা হয়।

 

এছাড়া স্কাউটিং এ বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বিভিন্ন গ্রুপ ও জেলা পর্যায়ে গ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে বৃক্ষরোপন, টিকাদান, স্যানিটেশন ও পরিবেশ সংরক্ষণ, জ্বালানি-সাশ্রয়ী চুলা, এবং বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় স্কাউটদের সেবাদান কর্মসূচি বাংলাদেশের মানুষ সর্বদাই শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।

 

স্কাউটদের এ সকল কার্যক্রম এবং বিভিন্ন ট্রেনিং এর জন্য বিভিন্ন ব্যাজ প্রদানের মাধ্যমে স্বীকৃতি দেয়া হয়। স্কাউটের তিনটি শাখার জন্য সর্বোচ্চ ব্যাজ হচ্ছে: শাপলা কাব, প্রেসিডেন্ট’স স্কাউট এবং প্রেসিডেন্ট’স রোভার স্কাউট। অ্যাডাল্ট লিডারদের স্কাউটিং এ অবদান রাখার জন্য তাঁদেরকেও বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ হচ্ছে রৌপ্য ব্যাঘ্র এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হচ্ছে রৌপ্য ইলিশ। 

যোগদান করেই একজন স্কাউট হয়ে উঠা যায় না। এর জন্য থাকতে হবে একাত্মতা। তাহলেই খুঁজে পাওয়া যাবে এর আনন্দ। কিছুদিন এর শিক্ষার পর শপথ পাঠের মাধ্যমে একজন ছেলে বা মেয়ে হয়ে ওঠে স্কাউট সদস্য, সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রোভার স্কাউট গ্রুপের ৩০ জন শপথ পাঠের মাধ্যমে স্কাউট সদস্যভুক্ত হয়েছে। 

 

প্রতিটি মানুষ জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে শপথ নিয়ে থাকে। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শপথের গুরুত্ব অপরিসীম। ইতিবাচক সকল শপথই জীবনকে সুন্দর করে। শপথের যথাযথ অনুশীলন ব্যক্তি জীবনকে যেমন সুন্দর করে তেমনি সমাজ বিনির্মাণ কিংবা বাষ্ট্রকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে যথেষ্ট সহায়তা করে থাকে।

 

তেমনি এক শপথের গল্প হল- আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে গ্রীসে এথেন্সে পেরিটলেসের শাসনামলে প্রত্যেক যুবককে আঠারো বছর বয়সে পদার্পণ উপলক্ষ্যে শপথ বাক্য উচ্চারণ করানো হতো, "জন্মের সময় যে এথেন্সকে আমি পেয়েছিলাম, মৃত্যুর সময় এর চেয়ে উন্নততর এথেন্সকে যেন পৃথিবীর বুকে আমি রেখে যেথে পারি।" প্রাচীন এথেন্সের এই শপথের গল্প অসাধারণ। কারণ তরুণদের এমন আত্মপ্রত্যয়ী শপথকে ঘিরেই গ্রীসে গড়ে উঠেছে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এমনকি সভ্যতাও।

 

স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ব্যাডেন পাওয়েল ১৯০৭ সালে ইংল্যান্ডের ব্রাউনসী দ্বীপে মাত্র ২০ জন বালককে নিয়ে প্রথম পরীক্ষামূলক স্কাউট ক্যাম্পের আয়োজন করেন। সেই থেকে স্কাউট আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছে এক অনন্য শপথ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল স্কাউট নিজ নিজ আত্মমর্যদার উপর নির্ভর করে এই শপথ পালন করে আসছে। স্কাউট শপথের প্রতিটি শব্দ, বাক্যের সুনিপুণ বিন্যাস পুরো শপথটিকে করেছে অনিন্দ্য সুন্দর আর সর্বজনীন।

 

শত বছর পেরিয়ে আজও স্কাউট শপথের প্রতিটি শব্দের আত্মপ্রত্যয়ী উচ্চারণ প্রতিটি স্কাউটকে অনুরনিত করে আসছে। শপথটি হল-

"আমি আমার আত্মমর্যাদার উপর নির্ভর করে প্রতিজ্ঞা করছি যে,

  • * আল্লাহ ও আমার দেশের প্রতি কর্তব্য পালন করতে
  • * সর্বদা অপরকে সাহায্য করতে
  • * স্কাউট আইন মেনে চলতে

আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।" (আল্লাহ্ শব্দের পরিবর্তে নিজ নিজ ধর্ম বিশ্বাস মতে স্রষ্টার নাম উচ্চারণ করা যাবে।)

 

আসুন, আমরা শপথ গ্রহণ করি- জীবনকে সুন্দর করার জন্য, সমাজকে বিনির্মাণের জন্য আর পৃথিবীকে যেমন পেয়েছি তার চেয়ে একটু শ্রেষ্ঠতর করে রেখে যাওয়ার জন্য-চেষ্টা করব। আর আমরা সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কে যেমন পেয়েছি তার চেয়ে একটু শ্রেষ্ঠতর করে রেখে যাওয়ার জন্য-চেষ্টা করব।